ডিজাইনের বদলে আমি ফ্যাসিলিটিজ দেখব। বর্তমান চালু থাকা টার্মিনালের থেকে, থার্ড টার্মিনালের আয়তন প্রায় আড়াইগুন। অর্থাৎ এয়ারপোর্টে ঢুকেই যে একটা ঘিঞ্জি ভাব, সেটি দূর করবে এই থার্ড টার্মিনাল। এরপরে আশেপাশের বড় কাচের জানালা এবং স্কাই লাইটের ব্যবহার,দিনের আলোর সর্বোচ্চ ব্যবহারের নিশ্চয়তা দিচ্ছে। দেয়ালে আমাদের ষড়ঋতুর বৈচিত্রময় ৬ টি রঙের ছটা থাকবে।
থাকবে চলমান ওয়াকয়ে। বর্তমানে ৮ টির বদলে থাকা ১৬ টি স্বয়ংক্রিয় লাগেজ বেল্ট। চিরাচরিত হাতে করে, যাচ্ছেতাই ভাবে লাগেজ ছুড়ের ফেলার বদলে৷ এবার পুরো লাগেজ হ্যান্ডিলিং হবে স্বয়ংক্রিয়। লাগেজের জন্য ঘন্টার পর ঘন্টা ওয়েটি করতে হবে না। যাত্রী লাগেজ রিসিভ না করলে। এটি স্বয়ংক্রিয় ভাবে চলে যাবে, লাগেজের জন্য পৃথক রুমে। এ আই সিস্টেমের মাধ্যমে যাত্রীকে বিমান বন্দরে নির্দিষ্ট কাউন্টার ও লাইনে দাড়াতে সিগনাল দেয়া হবে।
একসাথে ৩৭ টি বিমান পার্কিং করতে পারবে নতুন টার্মিনালে। থাকবে ২৬ টি বোর্ডিং ব্রীজ। ১০ টি অটোমেটিক ইমিগ্রেশেন কাউন্টারে কোন পুলিশ থাকবে না। আপনি নিজেই ইমেগ্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন। ৫৬ টি ইমিগ্রেশন কাউন্টারে থাকবে, ইইমিগ্রেশন পুলিশ। এর বাইরে ব্রেস্ট ফিডিং কর্নার, কানেক্টিং ফ্লাইটের জন্য অপেক্ষারতদের বিনোদনের ব্যবস্থা। শপিং জোন। এসব বাদ দিলাম।
সব চাইতে বড় কথা, ইতোমধ্যে এই টার্মিনাল ব্যবহারের জন্য, ব্রুনাই,মরিশাস, সুইজারল্যান্ড এরা চুক্তি করে ফেলছে। ৫৪ টি দেশ এই টার্মিনাল ব্যবহার করার জন্য ব্যাপক আগ্রহ প্রকাশ করছে।
মেট্রোরেল এবং এক্সপ্রেস ওয়ে ব্যবহার করে সরাসরি যাতে এই টার্মিনালে মানুষ ঢুকতে পারে।সেই ব্যবস্থায়ও আছে।এমনকি ভবিষ্যতে যে পাতাল রেল চালু হবে। তার জন্যও এখানে টানেল থাকবে।
সব থেকে বড় কথা বর্তমানে, বছরে ৮০ লাখ যাত্রী যে বিমান বন্দর ব্যবহার করেন। থার্ড টার্মিনাল চালু হলে সেটি দাঁড়াবে ২ কোটি ২০ লাখে।
বিমান বন্দরে এই থার্ড টার্মিনাল নির্মান করছে জাপান এবং দক্ষিন কোরিয়ার স্যামসাং কোম্পানি।
সরকারের যে ধামাকা দেয়া বড় প্রজেক্ট আছে। তার মধ্যে একটা এই থার্ড টার্মিনাল।
যারা গতকালের নির্মীত বহুতল কার পার্কিং এর নেট নিয়ে সমালোচনা বা উচু মানের রুচির পরিচয় দিতে গিয়ে। রাতারাতি ধরা খাইছেন। এরা কিন্তু পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল এর নির্মান কাজের সময়ও এই কাজ করছে।এ দুটোর নির্মান সম্পন্নের পরে বাকিটা ইতিহাস।
কিন্তু খাছলত এদের,এরপরেও বদল হয় নাই।
থার্ড টার্মিনালের, কাজ ৯০ শতাংশ সম্পন্ন।ফিনিশিং টাচ বাকি থাকা অবস্থায় এর সুন্দর্য নিয়ে এখনই মন্তব্য না করা শ্রেয়। আমার কাছে এই ডিজাইন খুব মন্দ লাগে নাই। সিঙ্গাপুরের চাঙ্গির আদলে গড়া এইটা। জগৎ বিখ্যাত আর্কিটেক্ট রোহানি বাহরিনের ডিজাইন এটি।
বাংলাদেশ বিমান বন্দরের পরে,আমি যখন থাইল্যান্ডের সূবর্নভূমি এবং টোকিওর নারিতা বিমান বন্দর ব্যবহার করছি। তখন আমাদের সবার মধ্যে আক্ষেপ ছিল।ওরা কি বানালো। আর আমাদের এয়ারপোর্টে কেমন!! এবারের ডিজাইন আর ছবি দেখে মনে হচ্ছে। ভবিষ্যতে এই টার্মিনাল ব্যবহার করলে। সেই আক্ষেপ থাকবে না।
ছবিঃসংগৃহিত
#শাহজালাল_আন্তর্জাতিক_বিমানবন্দর #থার্ড_টার্মিনাল